এলিজা বেটেল
১৮৫২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা রাজ্যের মেয়র এবং অন্যান্য সন্মানিত ব্যক্তির বিলাস ভ্রমণের জন্য তৈরি করা হয় এলিজা বেটেল। ১৮৫৮ সালে জাহাজটিতে আগুন লেগে যায়। ১০০ যাত্রীর মধ্যে ২৬ জনই মারা যায় ! সমুদ্রের ২৮ ফুট নিচে ডুবে যায় জাহাজটি। লোকমুখে শোনা যায়, পূর্ণিমার রাতে জাহাজটিকে পানির নিচ থেকে জ্বলন্ত অবস্থায় ভেসে উঠতে দেখা যায় ! ভেতর থেকে ভেসে আসে গানের শব্দ !
এমভি জোয়িতা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে তৈরি বিলাসবহুল মোটরচালিত নৌযান। ওটার নকশা এমন ছিল যে চাইলেও ওটাকে ডোবানো সম্ভব নয়। ১৯৩১সালে রোনাল্ড ওয়েস্ট নামের এক চলচ্চিত্র পরিচালকের নির্দেশে ওটা বানানো হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নৌযানটি কাজে লাগানো হয়। ১৯৫৫ সালে ২৫ জন যাত্রী নিয়ে টোকিলাও দ্বীপের উদ্দেশে রওনা হয় জোয়িতা। রওনা হওয়ার দুই দিনের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছার কথা থাকলেও জোয়িতার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পাঁচ সপ্তাহ অনুসন্ধানের পর নৌযানটি অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেলেও মেলেনি কোনো যাত্রী। অক্ষত জাহাজ থেকে ভুতুড়ে ঘটনার মতোই গায়েব হয়ে যায় যাত্রীরা। কারো মতে, ক্রুদের বিদ্রোহের বলি হয়েছিল যাত্রীরা, আবার কারো মতে ইঞ্জিন কক্ষে পানি ঢুকে যাওয়ায় পালিয়ে যায় সবাই।
লেডি লোভিবোন্ড
১৭৪৮ সালে জাহাজটির ক্যাপ্টেন সাইমন রিড তাঁর সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে পর্তুগালের উদ্দেশে রওনা হন। জন রিভারস নামক জাহাজের এক কর্মকর্তা ক্যাপ্টেনকে খুন করে জাহাজের দায়িত্ব নিয়ে নেন। এরপর রহস্যজনকভাবে একে একে মারা যায় সবাই। ৫০ বছর পরপর নাকি জাহাজটির প্রেতাত্মা সমুদ্রে ভেসে ওঠে।
ইয়াং টিজার
১৮১৩ সালে ব্রিটেনে পণ্য রপ্তানির জাহাজগুলোর ওপর নজর রাখতে আমেরিকানরা নিয়োগ করে ইয়াং টিজার নামের একটি জাহাজ। গতির কারণে জাহাজটি বিশেষ জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু ২৭ জুন দুটি শক্তিশালী জাহাজমিলে যখন ইয়াং টিজারকে ধাওয়া করে, তখন ৩০ যাত্রীসহ জাহাজটি পুড়ে যায়। পরের বছর সেই একই দিনে একই স্থানে জাহাজটি আবার দেখা যায়। তবে কাছাকাছি আসার সঙ্গে সঙ্গেই নাকি জাহাজটি হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। সমুদ্রে আজও সেই ভুতুড়ে জাহাজটি দেখা যায় বলে শোনা গেছে।
ওকটাভিয়াস
১৭৭৫ সালে গ্রিনল্যান্ডের কাছে এক তিমি শিকারি খুঁজে পান জাহাজটি। তিনি তাঁর দল নিয়ে জাহাজটি ঘুরে দেখেন। তাঁদের মতে, জাহাজের সব আরোহী ছিল মৃত আর বরফে আবৃত। ক্যাপ্টেনকে তাঁর কক্ষে চেয়ারে একটি কলম হাতে মৃত অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায়, পাশে একজন নারী ও চাদরে মোড়া একটি ছোট শিশু। ক্যাপ্টেনের বাঙ্ থেকে পাওয়া জিনিসপত্রের তারিখ থেকে বোঝা যায়, ১৩ বছর ধরে জাহাজটিএ অবস্থায় রয়েছে। এর কিছুদিন পরই জাহাজটি গায়েব হয়ে যায়।
ফ্লায়িং ডাচম্যান
সতের শতকের শেষ দিকের এই ভুতুড়ে জাহাজটির ক্যাপ্টেন ছিলেন হ্যানরিক ভ্যানডার ড্যাকেন। অনেক ঝড়ের মধ্যেও তিনি উত্তমাশা অন্তরীপ ঘোরার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু জাহাজচালক অন্যদের কথা চিন্তা করে সেদিকে যেতে নারাজ হলে তিনি তাঁকে মেরে পানিতে ভাসিয়ে দেন। এখনো নাকি জাহাজটি সমুদ্রের ওপর ভাসতে দেখা যায়। অনেক খ্যাতিমান এবং অভিজ্ঞ নাবিকও সমুদ্রের ওপর ফ্লায়িং ডাচম্যানকে ভাসতে দেখেছেন বলে শোনা যায়। ফ্লায়িং ডাচম্যানকে নিয়ে লেখা হয়েছে অনেক বই, নাটক ও চলচ্চিত্রের গল্প। তবে শূন্যে জাহাজ ভেসে ওঠার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। আলোর প্রতিসরণের কারণে দিগন্তরেখা ধরে এগিয়ে চলা জাহাজের প্রতিবিম্ব বিবর্ধিত হয়ে বাতাসে আরেকটা বড় প্রতিবিম্ব তৈরি করলেই মনে হবে একটা জাহাজ বুঝি হাওয়ায় ভেসে যাচ্ছে।
সংগৃহীত